আনারস চাষের ব্যবসা করে টাকা ইনকাম | Pineapple Farming Business in Bengali

শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য বিভিন্ন কাজ করার পাশাপাশি নানান ধরনের ফল খাওয়া আবশ্যক। বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের ফল রয়েছে যেগুলো আমরা দৈনন্দিন জীবনে খেতে পারি এবং নিজেকে সুস্থ রাখতে পারি। এর মধ্যে আনারস হল অন্যতম। আনারসের বিভিন্ন গুণের মধ্যে একটি হল এই ফল খেলে পাচনতন্ত্রের বিভিন্ন রোগ সেরে যায়।

ফলের বিভিন্ন উপকার হয়েছে ঠিকই, কিন্তু আনারস চাষ করে কি ভালো টাকা রোজগার করা যায়? অবশ্যই হ্যাঁ। আজকে আপনি জানবেন, আনারস চাষ করে কিভাবে করতে হয়, আনারস চাষ করে কত টাকা উপার্জন করা যায় এবং কিভাবে আনারস চাষ শুরু করতে হবে ইত্যাদি। এ বিষয়ে আজ বিস্তারিত জানতে পারবেন।

Pineapple Farming Business in Bengali

Pineapple Farming Business in Bengali

আনারস চাষ করার সঠিক সময়

আপনাকে জানিয়ে রাখি, আনারস হল ক্যাকটাস প্রজাতির উদ্ভিদ। আনারস চাষের পদ্ধতি খুবই সহজ। আনারস চাষ করার জন্য বিশেষ কোনো ঋতুর প্রয়োজন হয় না। বছরের যেকোনো সময় এই আপনি আনারস চাষ করতে পারেন। কোনো কোনো ফল রয়েছে যেগুলোর ক্ষেত্রে জলবায়ুর বিশেষ প্রভাব দেখা যায়। কিন্তু আনারসের ক্ষেত্রে তেমন কোন প্রভাব দেখা যায় না। তবে আনারস চাষের জন্য সবথেকে ভালো সময় হচ্ছে জানুয়ারি থেকে মার্চ এবং মে থেকে জুলাই এর মধ্যবর্তী সময়। তবে বারো মাসই আনারসের চাষ করতে পারেন।

আনারস চাষের পদ্ধতি

আনারস চাষের জন্য বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উপর লক্ষ্য রাখা দরকার এগুলো হলো-

  • যখন আনারসের চারা লাগাতে হবে তখন একটা বিষয় লক্ষ্য রাখতে হবে, যেন দুটি গাছের মধ্যে দূরত্ব 25 সেন্টিমিটার থাকে।
  • দুটি কাতারের মধ্যে দূরত্ব থাকতে হবে 60 সেন্টিমিটার।
  • আনারসের চাষ সাধারণত 89000 হেক্টর জমিতে করা হয়ে থাকে।

আনারসের চাষ কোথায় কোথায় হয়?

ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে আনারসের চাষ হয়ে থাকে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, কর্ণাটক, বিহার, মহারাষ্ট্র, গোয়া কেরালা এবং প্রায় সমগ্র উত্তর-পূর্ব ভারতে আনারসের চাষ হয়।

আনারস চাষের জলসচের প্রয়োজনীয়তা

এবার আমরা জানবো আনারস চাষের জন্য ঠিক কত সময় অন্তর অন্তর জলসেচ করার প্রয়োজন এবং ঠিক কোন পদ্ধতিতে জলসেচ করতে হয়। এবিষয়ে নিচে সবিস্তারে আলোচনা করা হলো-

  • 15 দিন অন্তর অন্তর আনারসের গাছে জল দেওয়ার প্রয়োজন হয়।
  • আনারস গাছের জন্য ছায়ার প্রয়োজন হয়। যদি অধিক রোদ পড়ে তাহলে গাছের পাতা শুকিয়ে যায় এবং এক সময় গাছ নষ্ট হয়ে যায়।
  • গাছ রোপনের সময় পরস্পর দূরত্বে রোপণ করা প্রয়োজন না হলে গাছগুলো ধীরে ধীরে নষ্ট হয়।
  • প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক সার যেমন ডিএপি, পটাশ, সুপার ইউরিয়া ইত্যাদি সার দেওয়ার প্রয়োজন হয়।

আনারস চাষে ফলনের পরিমান

আপনাদের আরো জানিয়ে রাখি, আনারসের একটি গাছ থেকে একবার মাত্র একটি ফল পাওয়া যায়। অর্থাৎ একটি লটে আপনি একবার ফলন তুলতে পারবেন। পরবর্তীকালে ফল পাওয়ার জন্য আবার আনারসের চারা জমিতে লাগাতে হবে।

আনারস চাষের জন্য প্রয়োজনীয় টাকা

আপনার যদি নিজস্ব জমি থাকে তাহলে ফসল লাগানো থেকে শুরু করে বাজারে বিক্রি করা পর্যন্ত মোট ২০ হাজার টাকার মধ্যে চাষের কাজ হয়ে যাবে। তবে জমির পরিমাণ এবং ফলনের পরিমাণের উপর কত টাকা লাগবে সেটা নির্ভর করে।

আনারস চাষ করে লাভের পরিমাণ (টাকা)

আপনি এতক্ষণ জানলেন আনারস চাষ কিভাবে করতে হয় এবং আনারস চাষ সম্পর্কিত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কথা। এখন আপনার মনে একটা প্রশ্ন জাগতে পারে বা জাগছে যে, আনারস চাষ করে ঠিক কত টাকা লাভ বা উপার্জন করা যায়। আপনি যদি প্রতি হেক্টরে 15 থেকে 20 হাজার গাছ লাগান তাহলে প্রায় 10 থেকে 15 টন আনারস উৎপাদিত হবে। আর এগুলো বাজারে বিক্রি করে আপনি মোটা টাকা উপার্জন করতে পারেন। যেহেতু বাজারে আনারসের দামের ক্ষেত্রে পার্থক্য লক্ষ্য করা যায় তাই সেই হিসাবে টাকাটা হিসাব করা জরুরি।

আশা করছি আনারস চাষ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গুলি আপনি বুঝতে পেরেছেন। যদি আপনি চান তাহলে আনারস চাষের ব্যবসা করে ভালো টাকা উপার্জন করতে পারেন। আনারস চাষের ক্ষেত্রে একটা ভালো বিষয় হচ্ছে, এটি চাষ করার জন্য অধিক পরিশ্রমের দরকার হয়না এবং ভালো মুনাফা অর্জন করা যায়। তাই নিজস্ব জমি থাকলে আনারস চাষের ব্যবসা খুব সহজেই শুরু করতে পারেন।