জব পেতে এই 5 টি স্কিল কাজে আসবে | Top 5 Skill to Learn in 2022

কোনো ডিগ্রি না বিশেষ কোনো স্কিল, আপনার মতে কোনটি চাকরি বা জব পেতে বা ইনকাম করতে সাহায্য করবে। আপনার জানা না থাকলে বা এই নিয়ে কোনো দ্বন্দ থাকলে আপনাকে জানিয়ে রাখি, বর্তমানের প্রতিযোগীতার এই বিশাল বাজারে শুধুমাত্র ডিগ্রি দেখিয়ে কোনো কাজ বা চাকরি পাওয়া খুব কঠিন। আপনি এই কথাটি বিশ্বাস করুন বা না করুন, এটাই সত্যি।

তাই আজকে আমরা এমন 5 টি স্কিল নিয়ে কথা বলবো যেগুলো শিখে রাখলে আপনার কোনো জব পেতে সমস্যা হবে না। আপনি চাইলে এগুলির মাধ্যমে নিজেই স্বাধীনভাবে কাজ করেও টাকা ইনকাম করতে পারেন। কোনো জব বা চাকরি না করেও নিজেই ইনকাম করতে পারবেন, সেটা সম্পূর্ন আপনার ইচ্ছা।

Top 5 Skill to Learn in 2022

এমন 5 স্কিল (Skill) সম্পর্কে আজকে আপনি জানতে পারবেন যেগুলির চাহিদা (Demand) বর্তমানে দারুন রয়েছে এবং আগামী বছরগুলিতেও থাকবে। এককথায় এই ৫ টি স্কিলের মধ্যে যেকোনো একটি শিখে রাখলে কয়েকমাসের মধ্যেই আপনি ইনকাম শুরু করতে পারবেন।

আপনাকে আবারো জানিয়ে রাখি, স্কিলগুলি শিখে যে আপনাকে শুধুমাত্র অন্য কোনো কোম্পানির হয়ে জব বা চাকরি করতে হবে তা নই। এগুলি শেখার পর আপনি চাইলে ফ্রিল্যান্সিং (Freelancing), স্টার্টআপ (Startup) শুরু করেও মোটা টাকা কামাই করতে পারবেন।

চলুন এইবার আমরা সরাসরি ঐ পাঁচটি স্কিলের কথায় চলে যায়। এর মধ্যে যেটি আপনার পছন্দ হবে অথবা আপনার মনে হবে যে, এটি নিয়ে কাজ করতে পারবো, শিখতে পারবো সেটিই বেছে নেবেন। চলুন তাহলে একে একে জেনে নেওয়া যাক-

(1) ব্লকচেইন ডেভেলপমেন্ট (Blockchain Development)

আপনি হয়তো ব্লকচেইন কথাটা শুনেছেন। এটি মুলত ডাটা স্টোর বা সংরক্ষন বা রেকর্ড করার Decentralized এবং Distributed মাধ্যম। শুধুমাত্র ক্রিপ্টোকারেন্সিতেই এর ব্যবহার করা হয় না। বর্তমানে Finance, Politics, Healthcare ইত্যাদিতে ব্লকচেইন টেকনোলজির ব্যহার করা হচ্ছে।

ব্লকচেইন ডেভেলপমেন্ট এর জন্য মূলত তিনটে স্কিল সম্পর্কে ভালো করে জানতে হবে, এগুলি হল- Programming, Data Structure এবং Cryptography

অনলাইনের মাধ্যমে বিশেষ করে ইউটিউবে, বিভিন্ন কোর্স করে এই ব্লকচেইন ডেভেলপমেন্ট সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাবে। অনলাইন থেকে ফ্রিতে এর বেসিক শিখে নিয়ে পরে কোনো পেইড কোর্স করে আরো বিস্তারে এই স্কিল সম্পর্কে জ্ঞান নিতে পারবেন। এবার আসি টাকার বা ইনকামের কথায়।

ভারতে একজন ব্লকচেইন ডেভেলপলার এর বেতন প্রতি বছরে 15 লক্ষ টাকা। প্রতি মাসে হিসেব করলে এক লাখ টাকারও বেশি। তবে দুই-তিন বছরের অভিজ্ঞতার পর এই ইনকামের (Salary) পরিমান আরো বাড়বে।

(2) ভিডিও এডিটিং, গ্রাফিক্স ডিজাইন এবং অ্যানিমেশন (Video Editing, Graphic Design & Animation)

সস্তা ইন্টারনেট, সবার হাতে মোবাইল ইত্যাদির কারনে এখন কনটেন্ট বা ভিডিও ক্রিয়েটারদের সংখ্যা বেড়েছে। যেকারনে ভিডিও এডিটিং, গ্রাফিক্স ডিজাইন এবং অ্যানিমেশন এর কাজের চাহিদাও বেড়েছে। প্রায় সকল ক্রিয়েটাররা তাদের কাজের প্রয়োজনে এইসমস্ত স্কিলে পারদর্শী ব্যাক্তিদের কাজের জন্য নিচ্ছে।

ভিডিও এডিটিং, গ্রাফিক্স ডিজাইন এবং অ্যানিমেশন এইগুলি তিনটে আলাদা আলাদা স্কিল। কিন্তু আমরা এগুলিকে একসাথে আলোচনা করছি। কেননা এই তিনটে স্কিল সম্পর্কে দক্ষ হলে বা কাজ জানা থাকলে কনটেন্ট ক্রিয়েটারদের প্রয়োজনীয়তা সম্পূর্ন হয়।

আপনি চাইলে এই স্কিল গুলি শিখতে পারেন। এগুলি এমন সব স্কিল যেগুলির চাহিদা আগামী বছরে আরো বাড়বে। এমনিতেই এই সমস্ত কাজের জন্য লোকের অভাব রয়েছে। তাই একটা কথা নিশ্চিত যে এই সমস্ত কাজ গুলি শিখে রাখলে আপনার কাজের কোনো অভাব হবে না।

একটা কথা না বললেই না, আপনার মনে হতে পারে এগুলি খুব কঠিন কাজ। কিন্তু বাস্তবে না। আপনি চাইলে ২-৩ সপ্তাহের মধ্যেই ভিডিও এডিটিং এর বেসিক কাজ শিখে নিতে পারেন। শেখার পর ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ শুরু করতে পারবেন। যেখান থেকে আপনার ছোটো অঙ্কের টাকা ইনকাম শুরু হয়ে যাবে। পরে এই বিষয়ে আরো বেশি দক্ষ হলে এবং অভিজ্ঞতা বাড়লে আপনার ইনকামও বাড়বে।

(3) প্রোগ্রামিং (Programming)

প্রোগ্রামিং বলতে কোনো সফটওয়্যার, ওয়েবসাইট বা কোনো কাজের জন্য কোডিং (Coding) করাকেই বোঝানো হয়। কোনো কাজের প্রোগ্রাম করতে অবশ্যই বেসিক কোডিং নলেজ থাকা আবশ্যক। আর এটা জানা থাকলেই যেকোনো কোম্পানিতে একজন প্রোগ্রামার হিসেবে আপনি জয়েন করতে পারেন।

বর্তমানের চাহিদাবহুল বিভিন্ন প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজগুলি হল- HTML, Python, Java, Ruby, CSS, Perl ইত্যাদি।

অনলাইনে বিভিন্ন ফ্রি কোর্সের মাধ্যমে এই সমস্ত প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ গুলি শেখা যাবে। আপনি চাইলে ঘরে বসেই ইন্টারনেট থেকে খুব সহজেই শিখতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে আপনাকে এফোর্ট দিতে হবে।

প্রোগ্রামিং শিখে আপনি বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করতে পারবেন, যেমন-

  • Big Data
  • Data Science
  • Cloud Computing
  • Blockchain

(4) ডিজিটাল মার্কেটিং (Digital Marketing)

আপনার যদি টেকনোলজি বা প্রোগ্রামিং নিয়ে কাজ করার ইচ্ছা না থাকে তাহলে মার্কেটিং বিশেষ করে ডিজিটাল মার্কেটিং এ কাজ করতে পারেন। মার্কেটিং বিষয়ে আপনার ইন্টারেস্ট থাকলে ডিজিটাল মার্কেটিং শেখা এবং কাজ করতে আপনার দারুন সুবিধা হবে।

নতুন কোনো স্টার্টআপ ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে কনটেন্ট ক্রিয়েটার সকলেই এখন তাদের পরিষেবা দিতে অথবা বিক্রি বাড়াতে ডিজিটাল মার্কেটিং এর সাহায্য নিচ্ছে। আর এরজন্য তারা ডিজিটাল মার্কেটারদের নিয়ে কাজ করছে।

ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে প্রধান দুটি কাজ করা হয়ে থাকে, এগুলি হল-

  • ব্র্যান্ড প্রোমোশন (Brand Promotion)
  • কনজিউমার বা কাস্টোমারদের কাছে প্রোডাক্ট পৌছে দেওয়া।

আপনাকে এটিও জানিয়ে রাখি, এখন দিনের দিনের পর ডিজিটাল কনটেন্ট বাড়ছে এবং সেইসাথে ডিজিটাল মার্কেটিং ও বেড়ে চলেছে। ইউটিউবে, ইন্সটাগ্রামে, ফেসবুকে আমরা যে বিভিন্ন অ্যাড (Ad) গুলি দেখতে পাই সেগুলি সবই ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমেই করা হয়।

আপনি চাইলে সম্পূর্ন ফ্রিতে ইউটিউবের মাধ্যমে ডিজিটাল মার্কেটিং এর বেসিক শিখে যাবেন। বেসিক শিখেই কোনো কোম্পানির জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং কাজ করতে শুরু করতে পারেন। ফ্রেশার হিসেবে কাজে যোগ দিলে প্রতি মাসে ১৫-২৫ হাজার টাকা স্যালারি দেওয়া হয়। তবে অভিজ্ঞতা বাড়ার সাথে সাথে আপনার ইনকামের পরিমান বাড়বে।

(5) মেটাভার্স টেকনোলজি (Metaverse Technologies)

মেটাভার্স কথাটা আপনি হয়তো কোথাও না কোথাও শুনেছেন। তবুও প্রথমেই জানিয়ে রাখি মেটাভার্স কি? মেটাভার্স হল 3D ডিজিটাল ভার্চুয়াল ওয়ার্ল্ড। যেখানে আপনি-আমি ডিজিটাল রূপে প্রবেশ করতে পারি।

আগামী দিনে এই টেকনোলজি দারুন উন্নতি লাভ করবে। তবে এর Mainstream-এ আসতে এখনো প্রায় ৫-২০ বছর মতো সময় লেগে যেতে পারে। তাই এখন থেকেই বেশ কিছু স্কিল শিখে রাখলে বর্তমান সময়ে তো বটেই আগামী দিনেও মেটাভার্স (Metaverse) নিয়ে কাজ করতে এমনকি Metaverse Build করতে পারবেন। এগুলি হল-

  • Blockchain
  • AR/VR
  • Artificial Intelligence
  • 3D Reconstruction
  • Internet of Things

সবশেষে,

আশা করছি 5 টি কর্মমূখী স্কিল নিয়ে লেখা আজকের এই আর্টিকেল থেকে আপনার উপকার হয়েছে। আপনি যদি আজকের এই লেখা থেকে নতুন কোনো বিষয়ে জানতে পেরে থাকেন তাহলে আমাদের কাজের উদ্দেশ্য সফল হয়েছে।

এই ৫ টি স্কিলের মধ্যে যেটি আপনার ভালো লাগবে বা যেটি নিয়ে আপনার জানার ইন্টারেস্ট আছে সেটি নিয়ে কাজ করা শুরু করতে পারেন। আপনি ফ্রিতে অনলাইন থেকেই কিছু স্কিল সম্পর্কে বেসিক জানতে পারবেন। তারপর অ্যাডভান্স লেভেল জানতে এবং কাজ করতে গেলে আপনাকে অবশ্যই কিছু টাকা খরচ করে কোনো পেইড কোর্স কিনে জ্ঞান অর্জন করতে হবে।